ক্যারিয়ার ও ইসলামী আন্দোলন

 


ক্যারিয়ার কি?

ক্যারিয়ার  মানে  বাহক।

-এক কথায়,  জীবনের সুনির্দিষ্ট  কর্মময়  অংশই  হলো  ক্যারিয়ার।

-জীবনব্যাপী  একজন  ব্যক্তি  মূলত  তার  পেশা  সংক্রান্ত যে  কর্মকাণ্ড  পরিচালনা  করেন  তাই তার  ক্যারিয়ার।  এটি  বিভিন্ন  চাকরি  পদ  কাজ  সম্মান    অভিজ্ঞতার  সমন্বয়ে  তৈরি  হয়।

-ক্যারিয়ার  হল  এক  বা  একাধিক  ধরনের  চাকরি  যা  পেশাগত  কারণে  একজন  ব্যক্তির  জীবনের  অনেক  টুকু  সময়  জুড়ে  থাকে।

Career is an occupation undertaken for a significant period of a person's life and with opportunities for progress.


ক্যারিয়ার কেন প্রয়োজন?

১. সফল ও দুশ্চিন্তহীন জীবন যাপনের জন্য।

২. সমাজে নিজের আত্মপরিচয়ের জন্য।

৩. আর্ত মানবতার জন্য কাজ করতে।

৪. আদর্শ বাস্তবায়নে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে (ওমর রা. এর মত)

৫. টার্গেটকৃতদের কাছে দাওয়াত পৌঁছে দিতে সহজ হয়

৬. সমাজের অসংগতি ও ত্রæটিগুলো ঐ সেক্টরে গিয়ে সমাধান করতে।


বর্তমানে আমাদের ক্যারিয়ার গড়তে দরকার:

১. বিসিএস পরিক্ষায় সফল হওয়া।

২. সরকারি/বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধনে উত্তীর্ণ হওয়া।

৩. সরকারি/বেসরকারি ব্যাংকের আবেদনে সফল হওয়া।

৪. প্রশাসনের বিভিন্ন সেক্টরে (নন ক্যাডার) চান্স পাওয়া।

৫. বিভিন্ন সরকারি কারিগরী ট্রেইনিং করা।

৬. কম্পিউটার ব্যবহারে পারদর্শী হওয়া।

৭. ইংরেজি ভাষার দক্ষতা অর্জন।

৮. একজন সফল ব্যবসায়ী হওয়া।


ইসলামী আন্দোলন কি?

আন্দোলন, Movement  এবং  حركة(হারাকাতুনযার সাধারণ অর্থ কোন দাবী -দাওয়া প্রতিষ্ঠার জন্যে এবং কোন কিছু রদ বা বাতিল করার জন্যে কিছু লোকের সংঘবদ্ধ নড়াচড়া বা উদ্যোগ গ্রহণ করা।

একটা দেশের প্রতিষ্ঠিত সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক সাংস্কৃতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন ইসলামী  ব্যবস্থার প্রবর্তন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পরিচালিত সংঘবদ্ধ সুসংগঠিত প্রচেষ্টাই সত্যিকার অর্থে  ইসলামী আন্দোলন নামে অভিহিত হতে পারে।


·    ইসলামী আন্দোলন কেন করব?
(
) ইসলামী  আন্দোলন  করা  ফরজে  আইন 

(সুরা- শুরা আয়াত ১৩)
(
) জাহান্নামের  শাস্তি  থেকে  বাঁচাতে  জান্নাত  লাভ গোনাহ মাফের জন্য।

(সুরা-আস সফ ১০-১৩)
(
) কাজের জন্য রাসুল ()কে পাঠানো হয়েছিল, সুতরাং এটা নবীওয়ালা কাজ।

 (সুরা আস সফ-)
(
) সৎ কাজের আদেশ অসৎ কাজের নিষেধের দায়িত্ব পালনের জন্য। 

(আল ইমরান ১০৪ ১১০)
(
) ইসলামী আন্দোলনের কাজ সর্বোত্তম কাজ।

(সুরা হা মীম আস সিজদা-৩৩)
(
) মুনাফিকের মৃত্যু থেকে বাঁচার জন্য।  

(মুসলিম শরীফের হাদিস আবু হুরাইরাহ (রা:) হতে বর্ণিত, সুত্র-কুরআন হাদিস সঞ্চায়ন ১ম খন্ড পৃষ্ঠা -৯৯)

 

·       ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের বৈশিষ্ট্যঃ

. ইখলাস বা আন্তরিকতা, নিষ্ঠা নিঃস্বার্থতা।

. দ্বীনের ইলম হাসিল করার নেশা।

. আমল বা বাস্তব জীবনে দ্বীনের আন্তরিক আনুগত্য।

. সংগঠনের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য।

. দায়ী ইলাললাহ হিসাবে সঠিক দায়িত্ববোধ।


ইসলামী আন্দোলন ও ক্যারিয়ারের সামঞ্জাস্যতা থাকলে কি লাভ?

১. আন্দোলনের ব্যক্তির ক্যারিয়ার ব্রাইট হলে ঐ আন্দোলনের স্পীড বাড়ে।

২. দুনিয়া ও আখিরাত দুটোই সফলকাম হয়।

৩. সফল ক্যারিয়ার সম্পন্ন ব্যক্তি আন্দোলনের জন্য মডেল হিসেবে উপস্থাপিত হয়।

৪. আন্দোলনের জন্য কাঙ্খিত সকল সেক্টরের চাহিদা পূরণ হয়।

৫. আন্দোলন ক্রমান্বয়ে সফলতার দিকে এগিয়ে যায়।

৬. আন্দোলনের এই গতিবেগকে কোন প্রতিবন্ধকতাই আটকে রাখতে পারে না।

৭. ইসলামী সমাজ বিনির্মানের জন্য পরিকল্পিত পরিবেশ সৃষ্টি ও চাপ তৈরি হয়।

৮. ধীরে ধীরে আউটপুট পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয় এবং আউটপুট আসতে শুরু হয়।

৯. ইসলামী আন্দোলনের দাওয়াত সর্বত্র চড়িয়ে পড়ে এবং গণভিত্তি তৈরি হয়।

১০. সাধারণ মানুষের কাছে এটি একটি গ্রহণযোগ্য মতাদর্শ হিসেবে তৈরি হয়।


ইসলামী আন্দোলন বা ক্যারিয়ার যেকোন একটি অসামঞ্জাস্য হয়ে গেলে কি ক্ষতি?

শুধু আন্দোলনকে গুরত্ব দিলে-

১. ঐ আন্দোলন মেধাহীন হয়ে পড়ে।

২. সংগঠনের মজবুতি ও গ্রহণযোগ্যতা হারায়।

৩. চারদিক থেকে প্রতিকূলতা বেড়ে যায়।

৪. নেতৃত্ব পেলেও তা স্থায়ী হয় না বা ধরে রাখা যায় না।

শুধু ক্যারিয়ারকে গুরত্ব দিলে-

৫. ঐ ব্যক্তির কাছে সংগঠন প্রত্যাশিত আউটপুট পায় না।

৬. এক সময় ঐ ক্যারিয়ার আত্মকেন্দ্রীক, দূর্নীতিপ্রবণ, দেশদ্রোহী ও ধ্বংস ডেকে আনে।

৭. আন্দোলনের সঠিক বুঝ না থাকায় আন্দোলনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যকে ত্রæটিপূর্ণ মনে হয়।

৮. আন্দোলনের মেজাজ তার মধ্যে থাকে না।

৯. যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তি জনগণের উপকারের পরিবর্তে জনগণের ক্ষতি ও আকল্যাণ করে।

১০. সামান্য সুযোগ পেলেই দূর্নীতিপ্রবণ হয়ে পড়ে এবং মুক্তির পথ ভুলে যায়।

Post a Comment

0 Comments

Close Menu