আনুগত্য, পরামর্শ ও এহতেসাব

 


✔ভূমিকাঃ
-ইসলামী আন্দোলনের জীবন ঘনিষ্ঠ তিনটি বিষয়ের নাম আনুগত্য, পরামর্শ ও এহতেসাব
-এগুলো একটি মানব দেহের হার্ট, ব্রেইন, কিডনির মত গুরত্বপূর্ণ
-শরীরে জীবনীশক্তি না থাকলে মানুষ যেমন গতিশীলতা হারিয়ে ফেলে তেমনি আনুগত্য, পরামর্শ ও ইহতেসাব না থাকলে সংগঠনের গতিশীলতা স্তিমিত হয়ে যায়।
-এগুলো না থাকলে সংগঠনের অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।
-সাংগঠনিক সুস্থতা, সংশোধন, গতিশীলতা ও সুন্দর পরিবেশের জন্য আনুগত্য, পরামর্শ ও ইহতেসাব গুরুত্বপূর্ণ
-এগুলো একটা অন্যটার পরিপূরক
-সাংগঠনিক কাজ বুঝার আগে অনুগত্য, পরামর্শ ও এহতেসাব বুঝা জরুরি।
-এর অভাবে একটি আদর্শবাদী দলের পতন হয়
-ইসলামী ছাত্রশিবির এক মহান কাফেলা, যার কর্মীদের এই তিনটি বিষয়ের অপূর্ব সমন্বয় থাকা উচিৎ
-ইতিপূর্বে এই আন্দোলনের কর্মীরা তার পরিচয় দিয়ে এসেছ
-যদিও আমাদের নিয়ে নিন্দুকের নানান কথা প্রচলিত আছে (আল্লামা সাঈদী ও অধ্যাপক মফিজের শিবির নিয়ে মন্তব্য)

✔আনুগত্য কী?
-আনুগত্য শব্দটি বাংলা, আরবি শব্দের অর্থ ইতায়াত এর অর্থ মান্য করা, মেনে চলা, আদেশ-নিষেধ পালন করা প্রভৃতি, ইংরেজিতে Obey. এর বিপরীত শব্দ ইসইয়ান বা নাফরমানি
☞ইসলামী সংগঠনের যাবতীয় ভালো কাজে নিজের মতামতের কুরবানী করে আল্লাহ ও তার রাসুলের সিদ্ধান্ত মেনে চলাকে আনুগত্য বলে।

✔আনুগত্যের গুরুত্বঃ
কুরআনের আলোকে-
# আনুগত্য করা ফরজ এটা আল্লাহর নির্দেশ- ‘আতিউল্লাহা ওয়াতিউর রাসুল (সূরা নিসা : ৫৯)
# আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার উপায়-
কুল ইনকুনতুম তুহিব্বুনাল্লাহা (সূরা আলে ইমরান : ৩১)
# আল্লাহর দয়া পাওয়ার উপায়-
আতিউল্লাহা…..লাআল্লাকুম তুরহামুন(সূরা আলে ইমরান : ১৩২)
# আনুগত্য মুমিনের কাম্য-
ফাত্তাকুল্লাহা ওআতিউর (সূরা শু’আরা : ১৩১)
# আনুগত্যহীনতা আমলকে বরবাদ করে-
আতিউল্লাহু……ওলা তুবতিলু আমালুকুম(সূরা মুহাম্মদ : ৩৩)
# ব্যক্তির পরিবর্তে আনুগত্য পরিবর্তন করা যাবে না-
ওমা মুহাম্মাদুন ইল্লা রসুল(সূরা আলে ইমরান : ১৪৪) (মুসাব ইবনে উমাইয়ারের কথা)
হাদিসের আলোকে-
# আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যম :
মান আতাআনি ফাক্বদ আতাআল্লাহ (বুখারি)
# সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভিত্তি-
লা ইসলামা ইল্লা বিল জামায়াত, লা জামায়াতা ইল্লা বিত্তয়াত (হযরত উমর ফারুক রা)
# পছন্দ হোক আর না হোক আনুগত্য করা ফরজ (বুখারি-মুসলিম)
# আনুগত্য করার নির্দেশ দিতে আল্লাহ তার রাসুলকে বলেছেন (আনা আমরুকুম বি খামসিন)
#আবু বকর রা. এর আনুগত্য (মিরাজ, হিজরত)
#আলী রা. এর আনুগত্য (আলী আমার জন্য জীবন দিতে পারবে?)
#মুতার যুদ্ধের সেনাপতিদের আনুগত্য (নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও)

✔আনুগত্যের সীমাঃ
# শরিয়তের সুস্পষ্ট বিধানের পরিপন্থী নয় এমন সব কাজেই আনুগত্য করতে হবে (লা ত্বয়াতা ফিল মাসিয়াতি ইন্নামাত ত্বয়াতা ফিল মারুফ)
# স্রষ্টার অবাধ্য হয়ে কোনো সৃষ্টির আনুগত্য করা চলবে না (ও ইন জাহাদাকা আন তুশরিক)
# খারাপ কাজে আনুগত্য তো নয়ই সহযোগীও হওয়া যাবে না (তায়াআনু আলাল বিররি ওত্তাকওয়া>সূরা মায়েদা:২ )

✔কাদের বা কিসের আনুগত্য করতে হবেঃ
# আল্লাহ, রাসূল ও দায়িত্বশীল
# সংবিধান, ঐতিহ্য, কর্মনীতি
# প্রতিনিধি, চিঠি, সার্কুলার, ঘোষণা।
# সংগঠনের নির্দেশ, পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত
# সংগঠনের সিস্টেম, নিয়ম-শৃঙ্খলা ও সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত।

✔কিসে আনুগত্য নষ্ট করেঃ
# আখেরাতের তুলনায় দুনিয়াকে অগ্রাধিকার দেয়া (কুল ইন কানা আবাকুম ও আবনায়ুকুম)
# আনুগত্যের গুরুত্ব সম্পর্কে অজ্ঞ থাকা (মান খারাজা মিনাত ত্বয়াতি…..মাইতাতান জাহেলিয়া)
# গর্ব-অহঙ্কার মুক্ত থাকা (ওলা তামশি ফিল আরদি মারাহা ইন্নাল্লাহা ইউহিব্বু কুল্লা মুখতালিন ফাখুর> সূরা লোকমান : ১৮)
# হিংসা-বিদ্বেষ (আহলে কিতাবের অনুসারীরা রাসুলের আনুগত্য না করার কারন)
# সিনিয়রিটি জুনিয়রিটি মনোভাব- ১৭ বছরের যুবক উসামা (রা) কে যুদ্ধের সেনাপতি নিযুক্ত করেছেন এবং তার অধীনে বড় বড় সাহাবীরা যুদ্ধ করেছেন)
#আত্মমর্যাদাবোধ কাজ করা (আবু তালিবের ঈমান না আনা)
# নিজেকে অতীব যোগ্য মনে করা (উসজুদু লি আদামা……ক্বলা আনা খাইরুম মিনহু খ্বরাকতানি মিনান নার ও খ্বলাকতাহু মিন ত্বীন> সূরা আরাফ : ১২)
#প্রভাব প্রতিপত্তি দেখে আনুগত্য করা (লাওলা নুজ্জিলা হাজাল কুরআনা আলা রাজুলিন মিনাল কারিয়াতাইনি আজিম>তায়েফ বাসী)

✔আনুগত্য পেতে দায়িত্বশীলদের করণীয়ঃ
# কর্মীদের সাথে ইনসাফপূর্ণ আচরণ করা (ইন্নাল্লাহা ইয়ামুরু বিল আদলি>সূরা নাহল : ৯০)
# জনশক্তিকে কুরআন-সুন্নাহ থেকে সংগঠন বুঝতে প্রেরণা দেয়া (নিসলে হুজ্জাত কাওলে)
# কর্মীদের প্রতি নম্ন কোমল ও রহমদিল হওয়া (ফা বিমা রাহমাতিম>সূরা আলে ইমরান : ১৫৯)
# অধস্তন ভাইদের দোষ-ত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখা (ওল কাজিবিনাল গাইজি ওল আফিয়িনা আনিন্নাস>আলে ইমরান : ১৩৪)
# কর্মী ভাইদের জন্য দোয়া করা এবং পরস্পর দোয়ার পরিবেশ তৈরি করা (যোগ্য দায়িত্বশীল তিনি যিনি তার কর্মীদের জন্য দোয়া করে)

✔পরামর্শঃ
পরামর্শ শব্দের অর্থ হলো উপদেশ দেয়া, বুদ্ধি দেয়া, মতামত দেয়া, মতবিনিময় করা। একে আরবিতে শূরা, ইংরেজিতে কাউন্সিল বা অ্যাডভাইস বলে।
☞কোনো কাজ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে সহযোগীদের সাথে যোগাযোগ ও উদার মন নিয়ে যে মতবিনিময় করা হয় বা  মতামত পেশ করাকে পরামর্শ বলে।

✔পরামর্শের গুরুত্বঃ
# কুরআনের নির্দেশ পরামর্শ করা এবং চূড়ান্ত হয়ে গেলে ভরসা করা (ও শায়েরহুম ফিল আমরি ফা ইযা আজামতা>আলে ইমরান : ১৫৯)
# পরামর্শ মুহাম্মদ (সা)-এর সুন্নত (ওমর>কানা রাসুলুল্লাহি সা. ইয়ু শায়িরু মায়া আবি বাকারিন ফিল আমরি মিন আমরিল মুসলিমিনা ও আনা মায়াহুম>তিরমিজি)
# সাহাবীদের বৈশিষ্ট্য (ও আমরু শুরা বাইনাহুম>আশ-শুরা : ৩৮)
# আন্দোলনের নিরাপত্তা প্রহরী (রাসুল>আল মুসতাশারু আল মু’তামিরু>যে পরামর্শ করে সে নিরাপদ থাকে)
#পরামর্শ করলে তাতে আল্লাহ রহমত থাকে, (খন্দকের যুদ্ধে সালমান ফারসীর পরামর্শ)
# উত্তম সিদ্ধান্তে পৌঁছা যায় (সকল চিন্তা কেন্দ্রীভুত হওয়ার কারনে)
# সবাই নিজের সিদ্ধান্ত মনে করে (কেউ কাউকে দোষারোপ করতে পারেন না>মিছিল, মিটিং)
#উৎসাহ উদ্দীপনা বৃদ্ধি পায় (‘ইয়া রাসূলাল্লাহ আপনি যদি বলেন সমুদ্রে ঝাঁপ দিতে, আমরা বিনা দ্বিধায় তাতেও প্রস্তুত আছি। আমরা মূসার কওমের মত উক্তি করবো না।’-বদর যুদ্ধের ব্যাপারে আনসারদের কথা)
# কাজের গুরুত্ব ও প্রকৃতি সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারণা জন্মে (কোন আইডিয়া না দিতে পারলে এর গুরত্ব আরেকজনকে ব্যক্ত করার যোগ্যতা হয়)
# স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ হয় ও আস্থা বাড়ে (একক সিদ্ধান্তে কিছু করার সুযোগ থাকে না)

✔পরামর্শ সম্পর্কে কয়েকটি হাদিসঃ
রাসূল (সা) বলেছেন,
#যখন তোমাদের নেতারা হবেন ভালো মানুষ, ধনীরা হবেন দানশীল এবং তোমাদের কার্যক্রম চলবে পরামর্শের ভিত্তিতে তখন মাটির উপরিভাগ নিচের ভাগের চেয়ে উত্তম হবে(তিরমিজি)
#যে ব্যক্তি মুসলমানদের পরামর্শ ছাড়াই আমির হিসেবে বাইয়াত নেয় তার বাইয়াত বৈধ হবে না। আর যারা তার ইসারতের বাইয়াত গ্রহণ করবে তাদের বাইয়াতও বৈধ হবে না। (মুসনাদে আহমদ)
# যে ব্যক্তি পরামর্শ নিয়ে কাজ করে তাকে কখনও লজ্জিত হতে হয় না। আর যে বা যারা ভেবে-চিন্তে এস্তেখারা করে কাজ করে তাকে ঠকতে হয় না।

✔পরামর্শ কারা দেবেঃ
# সর্বসাধারণের পরামর্শ (সবার স্বার্থ জড়িত এমন বিষয়ে, যেমনঃ দায়িত্বশীল, শাসক নির্বাচন)
# দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের পরামর্শ (মজবুতি বা পরিশুদ্ধিতা সংক্রান্ত, যেমনঃ বহিঃশক্তির মোকাবেলা, মান অবনতি)
# আহলে রায় বা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ (জটিল ইস্যুতে যেমনঃ শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন, HRM)

✔পরামর্শদাতার বৈশিষ্ট্য
# স্বতঃস্ফূর্তভাবে এবং নিজ দায়িত্বে পরামর্শ দেয়া (জোরাজোরি করার পর দিবে না: সভা. সেক্রে. সমন্বয় করে কাজ করা দরকার)
# বিষয়টি ভালোভাবে বুঝা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করা (অপ্রাসঙ্গিক পরামর্শ দিবে না)
# প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ ও প্রস্তুতি (প্রোগ্রাম প্রসঙ্গে পরিস্থিতি খারাপের কথা বলা)
# সরাসরি দায়িত্বশীলকে বলা (মাধ্যম হয়ে না বলা: জনশক্তিদের বিষয়ে অভিযোগ)
# যথাসময়ে বলা (ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর বলে লাভ নেই)
# দ্বিধাহীনচিত্তে স্পষ্টভাবে মতপ্রকাশ (বললে দায়িত্বশীল কি মনে করবেন)
# পরামর্শ গৃহীত না হলে সন্তুষ্টি সহকারে সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া ও নিজের মত ভুলে যাওয়া (কাজের ফিডব্যাকের সাথে নিজের পরামর্শের তুলনা)
# সিদ্ধান্ত পালনে দৃঢ়তা এবং বাইরে না বলা (সেটআপ, মানের পদস্খলন)

✔পরামর্শ প্রদানের পদ্ধতিঃ
# কল্যাণ কামনার উদ্দেশ্যে পরামর্শ দেয়া (রাগান্বিত বা মুখ ভার হয়ে না বলা)
# মার্জিত ভাষায় পরামর্শ দেয়া (সাহাবীর পাহাড়ের ঢালুতে তাবু তৈরির পরামর্শ)
# সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে পরামর্শ দেয়া (পরে পরামর্শ দেয়া আর সমালোচনা করা একই)
# পরামর্শ গৃহীত হলো কি না তা বিবেচনা করে পরামর্শ দেয়া যাবে না।
# পরামর্শ দিয়ে আবার দেখবে না যে তার পরামর্শ গৃহীত হলো কিনা (পরামর্শ দিয়ে লাভ কি গৃহীত হয় না)
# পরামর্শ দেয়ার ব্যাপারে গ্রুপিং না করা ( টার্গেট করে কয়েকজন একসাথে একটা বিষয়ে না বলা)
# ক্ষতিকর পরামর্শ দেয়া যাবে না (দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে)
# সামষ্টিক মতের নিকট নিজের মতের কোরবানি দেয়া (রাসুল মাঝে মাঝে তা করেছেন)
# নিজের মতের বিপরীত সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে তা বাইরে প্রকাশ না করা (আমি বলেছি শুনে নাই)

✔এহতেসাবঃ
এহতেসাব শব্দটি আরবি যার বাংলা অর্থ হলো, গঠনমূলক সমালোচনা বা সংশোধনের উদ্দেশ্যে সমালোচনা।
☞অপরের কল্যাণ কামনায় ভুল-ত্রুটি দেখিয়ে দেয়ার পদ্ধতিকে এহতেসাব বলে (ইন্নামাল মুমিনুনা ইখওয়াতুন ফা আসলিহু বাইনা আখওযাইতুম)

✔সমালোচনা দুই প্রকারঃ
☞সামষ্টিক গঠনমূলক সমালোচনাকে মুহাসাবা বলে
☞সংশোধন ও উন্নয়নের জন্য গঠনমূলক সমালোচনাকে এহতেসাব বলে

✔এহতেসাবের গুরুত্বঃ
# দুর্বলতার প্রতিকার ও গতিশীলতা করার জন্য (না হয় সঠিক মনে করে তা আজীবন চলতে থাকবে)
# গিবতের পথ বন্ধ করার জন্য (গীবত আর মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া, ঈমাম বুখারীর উক্তি)
# সন্দেহ প্রবণতা দূর করার জন্য (জিজ্ঞেস করে ভুল ধারনার অপনোদন হয়)
# মজবুত সম্পর্ক গড়ে ওঠে (নিন্দুকেরে ভাসি আমি…..যুগ জনমের বন্ধু আমার আঁধার ঘরের আলো)
# পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পায় (উমর>যে তোমার দোষ ধরে বন্ধু সেই জন)
# আখেরাতের জবাবদিহি থেকে বাঁচা যায় (ইন্না সায়াদাতানা ওকুবরা আনা ফা আদাল্লুনাস সাবিলা)

✔এহতেসাবের উদ্দেশ্যঃ
-অপরের দোষ-ত্রুটি সংশোধনের জন্য।
-অপর ভাইয়ের কল্যাণ কামনা।
-সম্পর্ক উন্নয়ন ও গভীর করার জন্য।

✔এহতেসাবের ধাপ সমূহ
# ব্যক্তিগতভাবে একে অপরকে সংশোধনের চেষ্টা।
# সংশোধন না হলে দায়িত্বশীলকে জানানো।
# তাতেও যদি সংশ্লিষ্ট ভাইকে সংশোধন না হয়, তা হলে দায়িত্বশীলের অনুমতি সাপেক্ষে সামষ্টিক ইহতেসাব করা।

✔এহতেসাবের সঠিক পন্থাঃ
# কারো ছিদ্রান্বেষণ বা দোষ-ত্রুটি খুঁজে বেড়ানো উচিত নয়।
# পেছনে বসে সমালোচনা করা যাবে না।
# সমালোচনায় কোনো বাড়াবাড়ি হওয়া উচিত নয়।
# সমালোচনা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ এবং কোনোরূপ স্বার্থসিদ্ধি ও দুরভিসন্ধি থেকে মুক্ত হওয়া উচিত।
# বক্তব্যটুকু বলে দেয়ার পর তাকে আর মনের মধ্যে লালন করা উচিত নয়।
# এহতেসাবের ভাষা হবে মোলায়েম, ভাষায় কোনো তেজ থাকবে না এবং ক্ষোভের অভিব্যক্তিও ঘটবে না।
# আল্লাহকে হাজির নাজির জেনে ইহতেসাব করা।
# কাউকে হেয় করার উদ্দেশ্যে ইহতেসাব না করা।
# কারণ দর্শানোর পর ঐকান্তিকতার সাথে মেনে নেয়া এবং সবকিছু অন্তর থেকে মুছে ফেলা।
#এহতেসাব হলো সংশোধনের সর্বশেষ ধাপ (এটি তালাকের মতো)

✔যার ইহতেসাব করা হবে তার করণীয়ঃ
# ছলচাতুরীর আশ্রয় না নিয়ে ত্রুটির স্বীকৃতি দেয়া।
# সংশোধনের জন্য দোয়া কামনা করা ও প্রচেষ্টা চালানো।
# সুন্দর ভাষায় কারণ বর্ণনা করা।
# ভুল ধারণা অন্তর থেকে মুছে ফেলা।
# যৌক্তিক অভিযোগ খণ্ডন ও উত্তর দেয়া।

✔সংগঠনে ইহতেসাব না থাকার পরিণামঃ
# আন্দোলনের গতিশীলতা কমে যায়।
# পারস্পরিক সম্পর্কের কৃত্রিমতা আসে।
# পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস কমে যায়।
# গিবতের মতো মারাত্মক রোগ ছড়িয়ে পড়ে।

 

Post a Comment

0 Comments

Close Menu